Urinary tract infection মেয়েদের এই কমন অসুখের লক্ষণ ও এর থেকে মুক্তির উপায়
মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) হলো একটি সংক্রমণ যা মূত্রনালির যেকোনো অংশে হতে পারে, যেমন মূত্রাশয়, মূত্রনালী, কিডনি বা মূত্রনালিতে। এই সংক্রমণ পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই হতে পারে, তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি সাধারণ। UTI এর কারণে সংক্রমণ হলে ব্যথা, অস্বস্তি এবং মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে।
কারণ:
UTI সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে ঘটে। সাধারণত ই. কোলাই (Escherichia coli) নামক ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালিতে প্রবেশ করে এবং সংক্রমণ সৃষ্টি করে। আরও কিছু কারণ হলো:- প্রাকৃতিক শারীরিক গঠন: মহিলাদের মূত্রনালী তুলনামূলকভাবে ছোট হওয়ায় ব্যাকটেরিয়া সহজেই মূত্রাশয়ে পৌঁছে যায়।
- অপরিষ্কারতা: সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা, বিশেষত যৌন মিলনের পর পরিষ্কার না রাখা, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
- মূত্রত্যাগ বন্ধ রাখা: দীর্ঘ সময় ধরে মূত্রত্যাগ না করলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটতে পারে।
- যৌন মিলন: নিয়মিত যৌন মিলন মূত্রনালিতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
- অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার: অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়াল ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
- দেহে পানির অভাব: পর্যাপ্ত পানি পান না করলে মূত্র কম হয় এবং মূত্রনালিতে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার হয় না।
লক্ষণ:
- মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া
- ঘন ঘন মূত্রত্যাগের প্রয়োজন অনুভব করা
- মূত্রের দুর্গন্ধ বা রং পরিবর্তন
- তলপেটে ব্যথা বা চাপ অনুভব
- মূত্রের সাথে রক্ত আসা
- জ্বর বা শীত
প্রতিকার:
UTI এর চিকিৎসার জন্য সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে সংক্রমণ দ্রুত সেরে যায়। তবে কিছু সাধারণ প্রতিকার আছে যা UTI এর ঝুঁকি কমাতে পারে:- পর্যাপ্ত পানি পান করা: বেশি পানি পান করলে মূত্রনালী পরিষ্কার থাকে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়।
- সঠিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা: মূত্রত্যাগের পর সামনের দিক থেকে পিছনের দিকে পরিষ্কার করা উচিত, যাতে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ না করতে পারে।
- মূত্রত্যাগ বন্ধ না রাখা: প্রয়োজন হলে সাথে সাথে মূত্রত্যাগ করা উচিত, বিশেষত যৌন মিলনের পর।
- সঠিকভাবে পরিষ্কার করা: যৌন মিলনের পর মূত্রত্যাগ ও মূত্রনালী পরিষ্কার করে নেওয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
- বিভিন্ন ধরনের গ্লাভস বা কনডম ব্যবহার করা: যৌন মিলনের সময় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে প্রতিরোধক হিসেবে কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে।
- স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, বিশেষত মূত্রত্যাগ ও যৌন মিলনের পর মূত্রনালী সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রচুর পানি পান করা: পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে আসে এবং মূত্রনালী পরিষ্কার থাকে।
- কিছু খাবার এড়ানো: অ্যালকোহল, ক্যাফেইন, মসলাযুক্ত খাবার এবং চিনি UTI এর উপসর্গ বাড়াতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
- যৌন মিলনের সময় সতর্কতা: যৌন মিলনের আগে ও পরে সঠিকভাবে পরিষ্কার হওয়া এবং প্রতিরোধক ব্যবহার করা উচিত।
- ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা: প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।


কোন মন্তব্য নেই