Header Ads

জিনসেং এর উপকারিতা এর ক্ষতিকর দিক ও জিনসেং সিরাপ

 

জিনসেং

জিনসেং প্রাচীন ভেষজের আধুনিক স্বাস্থ্য উপকারিতা

জিনসেং একটি প্রাচীন ঔষধি উদ্ভিদ যা পূর্ব এশিয়ায় এবং উত্তর আমেরিকায় পাওয়া যায়। এটি চীনা, কোরিয়ান এবং আমেরিকান ঔষধে ব্যবহৃত হয় এবং এর শিকড় ঔষধি গুণের জন্য বিখ্যাত। এর বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, তবে প্যানাক্স (Panax) প্রজাতির জিনসেং সবচেয়ে জনপ্রিয়।

 উপকারীতা:

জিনসেং এর বহু উপকারী গুণ আছে, যার কিছু নীচে উল্লেখ করা হলো:
  • উচ্চ শক্তি বৃদ্ধি: জিনসেং শারীরিক এবং মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ক্লান্তি কমাতে কার্যকর।
  •  মনোযোগ এবং মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি: এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক এবং স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারে।
  • ইমিউন সিস্টেম উন্নতি: জিনসেং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশি এবং অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  •  ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: কিছু গবেষণা বলেছে, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, বিশেষত টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য।
  •  হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি: এটি যৌন ক্ষমতা এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকরী।
  • অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ: জিনসেং শরীরের কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয় এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
  • হৃদরোগ প্রতিরোধ: কিছু গবেষণা বলেছে যে এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

ক্ষতিকর দিক:

যদিও জিনসেং সাধারণত নিরাপদ মনে করা হয়, তবে কিছু মানুষের জন্য এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে:
  • উচ্চ রক্তচাপ: যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে জিনসেং গ্রহণে সতর্কতা প্রয়োজন কারণ এটি রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • ঘুমের সমস্যা: দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কিছু লোকের ক্ষেত্রে অনিদ্রা হতে পারে।
  • মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা: কিছু মানুষ জিনসেং সেবনের পর মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরার অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন।
  • পেটের সমস্যা: পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে।
  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে এটি হরমোনের স্তরে পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যার ফলে মাসিকের অনিয়ম দেখা দিতে পারে।
  • ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া: রক্ত পাতলা করার ঔষধ বা ইনসুলিন ব্যবহার করলে জিনসেং খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

সেবন পদ্ধতি:

জিনসেং শিকড়ের গুঁড়া, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা চা হিসেবে গ্রহণ করা যায়। এর সেবন পদ্ধতি এবং ডোজ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিছু প্রচলিত পদ্ধতি হলো:
  • চা: ১ থেকে ২ গ্রাম শুকনো জিনসেং শিকড় দিয়ে গরম পানিতে ১০-১৫ মিনিট ফুটিয়ে চা হিসেবে পান করা।
  • ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট: দৈনিক ২০০-৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট আকারে গ্রহণ করা যায়। ডোজ সাধারণত দিনে দুইবার নেওয়া হয়।
  • গুঁড়া: ১-২ গ্রাম শুকনো গুঁড়া সরাসরি পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • টিঙ্কচার: এটি তরল আকারে গ্রহণ করা যায়, সাধারণত দিনে ১-২ মিলে গ্রহণ করা হয়।

কোথায় পাওয়া যায়:

জিনসেং প্রাকৃতিকভাবে চীন, কোরিয়া, রাশিয়া এবং আমেরিকায় পাওয়া যায়। বাজারে এটি স্বাস্থ্য খাদ্য দোকান, ফার্মেসি বা অনলাইন স্টোরে সহজেই পাওয়া যায়।

সতর্কতা:

জিনসেং গ্রহণ করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি আপনি অন্য কোনো ঔষধ সেবন করে থাকেন বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থাকে।

আরো দেখুন

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.