Header Ads

থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

 

থানকুনি পাতার

যৌন চিকিৎসায় থানকুনি পাতার ভুমিকা 

থানকুনি (Centella Asiatica), যাকে "Gotu Kola" নামেও পরিচিত, একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা প্রধানত ঔষধি গুণাবলীর জন্য পরিচিত। এটি দক্ষিণ এশিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জন্মায়। থানকুনি গাছের পাতা মূলত খাদ্য ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিম্নে থানকুনির উপকারিতা, ক্ষতিকর দিক, চাষ পদ্ধতি এবং প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো:

থানকুনির উপকারিতা

  • স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: থানকুনির পাতার নির্যাস স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • জ্বর ও ঠাণ্ডা কমানো: থানকুনি পাতার রস সর্দি, কাশি ও জ্বর উপশমে ব্যবহার করা হয়।
  •  কোষের মেরামত ও পুনর্জন্ম: থানকুনি কোষের পুনর্গঠন ও মেরামতে সহায়ক, যা ত্বকের ক্ষত ও দাগ দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
  • আন্ত্রিক স্বাস্থ্য: থানকুনি পাতা খেলে পেটের গ্যাস, ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ত্বক ও চুলের যত্ন: থানকুনির নির্যাস ত্বকের বলিরেখা কমায় এবং চুল পড়া রোধে কার্যকর।
  • ঘুমের সমস্যায় সাহায্যকারী: থানকুনি নির্যাস নিয়মিত সেবনে ঘুমের সমস্যা দূর হয়।
  • হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা: থানকুনি পাতার উপাদান হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

থানকুনির ক্ষতিকর দিক:

  • অতিরিক্ত সেবনে বিষক্রিয়া: অতিরিক্ত থানকুনি খেলে লিভার ও কিডনির সমস্যা হতে পারে।
  • রক্তে শর্করার মাত্রা কমানো: অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে রক্তের শর্করা মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় সতর্কতা: গর্ভাবস্থায় থানকুনি খাওয়া নিরাপদ নয়, কারণ এটি গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • এলার্জি: কিছু মানুষের জন্য থানকুনি থেকে এলার্জি হতে পারে, যা ত্বকে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির সৃষ্টি করতে পারে।
  • মস্তিষ্কে প্রভাব: দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

থানকুনির চাষ পদ্ধতি:

  • মাটি নির্বাচন: থানকুনি চাষের জন্য উর্বর, দোঁ-আশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। তবে, এটি আর্দ্র এবং আংশিক ছায়াযুক্ত স্থানে ভালো জন্মায়।
  • বীজ রোপণ: থানকুনির বীজ সাধারণত বসন্তকালে রোপণ করা হয়। বীজগুলো মাটির উপর ছিটিয়ে দিয়ে সামান্য মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।
  •  সেচের প্রয়োজন: মাটি সবসময় আর্দ্র রাখা উচিত, তবে অতিরিক্ত পানি জমে না থাকা নিশ্চিত করতে হবে।
  • সার প্রয়োগ: জৈব সার ব্যবহার থানকুনি গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সহায়ক।
  • প্রতিকূলতা: থানকুনি গাছকে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষা করার জন্য কীটনাশক স্প্রে করা প্রয়োজন।
  • ফসল তোলা: সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে থানকুনি গাছ পরিপক্ক হয় এবং পাতা সংগ্রহ করা হয়। পাতাগুলি কাটার পর, সেগুলি পরিষ্কার করে বাজারজাত করা যায়।

কোথায় কোথায় পাওয়া যায়:

থানকুনি সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার গ্রামীণ এলাকায় থানকুনির সহজলভ্যতা রয়েছে। এছাড়াও, আফ্রিকার কিছু অঞ্চলেও থানকুনি জন্মে।

কোন জাত ভালো:

বিভিন্ন অঞ্চলে থানকুনির ভিন্ন ভিন্ন জাত পাওয়া যায়, তবে সবচেয়ে ভালো এবং জনপ্রিয় জাতগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
  •  Centella Asiatica (উত্তর ভারতীয় জাত): এই জাতটি ঔষধি গুণাবলীর জন্য বিখ্যাত এবং প্রচুর পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ।
  • Centella Erecta (দক্ষিণ ভারতীয় জাত): এই জাতের থানকুনি বিশেষত আয়ুর্বেদিক ঔষধে বেশি ব্যবহৃত হয়।
  •  Centella Glabra: এই জাতটি পাতা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি সালাদ এবং ভেষজ চা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

উপসংহার:

থানকুনি একটি ঔষধি উদ্ভিদ যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে, সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক পদ্ধতিতে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি, কারণ অতিরিক্ত সেবন করলে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। থানকুনির চাষ সহজ এবং কম খরচে করা যায়, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।


আরো দেখুন..

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.