Header Ads

বন কাঁঠাল উপকারিতা, ক্ষতিকর দিক, চাষ পদ্ধতি এবং বিভিন্ন জাত

 

বন কাঁঠাল

বন কাঁঠাল উপকারিতা, ক্ষতিকর দিক, চাষ পদ্ধতি এবং বিভিন্ন জাত

 বন কাঁঠাল পরিচিতি

বন কাঁঠাল, যা বিজ্ঞানসম্মত নাম *Artocarpus chama* নামে পরিচিত, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। এটি মূলত কাঁঠালের বুনো জাত এবং চাষকৃত কাঁঠালের তুলনায় আকারে ছোট। এ গাছটি প্রধানত বনাঞ্চলে জন্মে এবং তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়। এর ফলের গন্ধ এবং স্বাদ কাঁঠালের মতোই, তবে তুলনামূলকভাবে কম মিষ্টি। ফল ছাড়াও এর গাছের পাতা, কাঠ এবং অন্যান্য অংশও ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন কাজে।

বন কাঁঠালের উপকারিতা

  • পুষ্টিগুণ: বন কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং প্রোটিন রয়েছে। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  •  অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য: বন কাঁঠাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয় এবং কোষের ক্ষতি রোধ করে। এটি বার্ধক্য প্রতিরোধ এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতেও কার্যকর।
  • হজমে সহায়ক: এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: এই ফলটি পটাসিয়ামের ভালো উৎস হওয়ায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
  • রোগ প্রতিরোধ: বন কাঁঠালের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শীতকালীন সর্দি-কাশির প্রতিরোধে সহায়ক।

বন কাঁঠালের ক্ষতিকর দিক

  • অতিরিক্ত গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অতিরিক্ত পরিমাণে বন কাঁঠাল খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস বা বদহজম হতে পারে। তাই পরিমাণমতো খাওয়া উচিত।
  • অ্যালার্জি: কিছু মানুষের মধ্যে বন কাঁঠাল খাওয়ার পর অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন ত্বকে র‍্যাশ বা চুলকানি।

 চাষ পদ্ধতি

বন কাঁঠালের চাষ পদ্ধতি বেশ সহজ হলেও কিছু বিশেষ যত্নের প্রয়োজন:

  • মাটি নির্বাচন: বন কাঁঠাল হালকা, বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়। তবে পাহাড়ি এলাকায় এর চাষের জন্য অনুকূল।
  • চারা রোপণ: বন কাঁঠালের চারা তৈরি করতে বীজ ব্যবহার করা হয়। বীজ বপন করার ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে চারা গজায়। ৬-৮ মাস বয়সের চারা স্থায়ী জায়গায় রোপণ করা হয়।
  • জলসেচ: বন কাঁঠাল গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। বর্ষাকালে সেচ প্রয়োজন হয় না, তবে শুষ্ক মৌসুমে হালকা সেচের প্রয়োজন হতে পারে।
  • সার প্রয়োগ: সাধারণত কম সার প্রয়োজন হলেও ভালো ফলনের জন্য জৈব সার ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া নিয়মিত মাটি আলগা করে দেওয়া প্রয়োজন।
  • রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: বন কাঁঠাল গাছের প্রধান শত্রু হলো পোকামাকড়। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে এগুলোর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

কোথায় পাওয়া যায়

বন কাঁঠাল বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট, এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বন কাঁঠালের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়া ভারত, নেপাল, মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকাতেও এ ফলটি পাওয়া যায়।

 ভালো জাত

বন কাঁঠালের বিভিন্ন জাত রয়েছে। যেসব জাতের ফল মিষ্টি এবং বড় আকারের হয়, সেগুলো বেশি জনপ্রিয়। চাষের জন্য স্থানীয় এবং উন্নত জাতের চারার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। উন্নত জাতের বন কাঁঠাল সাধারণত বেশি মিষ্টি, বড় আকারের এবং মজবুত গাছের হয়।

আরো দেখুন..

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.