ধুন্দল এর উপকারিতা ধুন্দল চাষ পদ্ধতি
ধুন্দুল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই সবজির উপকারিতা
ধুন্দল (Sponge Gourd) বা লুফা
1. স্বাস্থ্য উপকারিতা:
- ধুন্দল ভিটামিন এ, সি এবং মিনারেলস সমৃদ্ধ। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের যত্নে ধুন্দল অত্যন্ত উপকারী, কারণ এটি ফ্রি র্যাডিকালস থেকে সুরক্ষা দেয়।
- ধুন্দল খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
2. ওজন কমানো:
ধুন্দল ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি, যা দ্রুত পেট ভরতে সহায়তা করে, ফলে ওজন কমানোর জন্য উপযুক্ত।
ক্ষতিকর দিক:
- অতিরিক্ত খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অতিরিক্ত ধুন্দল খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে, যেমন ডায়রিয়া।
- এলার্জি: কিছু মানুষের জন্য ধুন্দল অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, যা ত্বকে চুলকানি বা লালভাব তৈরি করতে পারে।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা প্রকৃতির: এটি ঠান্ডা প্রকৃতির সবজি হওয়ায় অতিরিক্ত খেলে সর্দি-কাশি হতে পারে।
চাষ পদ্ধতি:
- মাটি: ধুন্দল চাষের জন্য উর্বর এবং সুনিষ্কাশিত দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। মাটির pH স্তর ৬-৭ হওয়া উচিত।
- বপন সময়: গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল ধুন্দল চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। সাধারণত এপ্রিল-জুন মাসে চারা বপন করা হয়।
- বীজ বপন: ধুন্দলের বীজ সরাসরি জমিতে বপন করা হয়। ৩০-৪০ সেমি দূরত্বে বীজ বপন করতে হয়।
- সার প্রয়োগ: চারা গজানোর আগে ১০-১৫ টন পচা গোবর সার এবং ১০০-২০০ কেজি নাইট্রোজেন সার মাটিতে মেশানো উচিত।
- সেচ ব্যবস্থা: পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করতে হবে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। তবে অতিরিক্ত পানি যেন না জমে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- পোকামাকড় ও রোগ নিয়ন্ত্রণ: ধুন্দল গাছের প্রধান শত্রু হল পোকামাকড়, যেমন লাল মাকড় এবং লাউ বিটল। নিয়মিত কীটনাশক ছিটানো প্রয়োজন।
কোথায় পাওয়া যায়:
- ধুন্দল দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বেশিরভাগ দেখা যায়। এটি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং চীনেও ব্যাপকভাবে চাষ হয়।
- বাংলাদেশে দেশের প্রায় সব অঞ্চলে ধুন্দল পাওয়া যায়, তবে বরিশাল, খুলনা এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে এর ব্যাপক চাষ হয়।
ভালো জাত:
- PBNS-1: এটি একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।
- Pusa Chikni: এটি মাঝারি আকারের ধুন্দল উৎপাদন করে এবং প্রায় ৬০-৭০ দিনে ফল দেয়।
- Satputia: খুবই জনপ্রিয় এবং বাজারে চাহিদা সম্পন্ন একটি জাত।

কোন মন্তব্য নেই